সাজেক ভ্যালির ছবি , সাজেক ভ্যালি ভ্রমন খরচ , সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত , সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত জানতে অনেকেই ইন্টারেনেটের সার্চ দিয়ে থাকেন তাদের জন্যই মূলত্ব আজকের এই আর্টিকেল । সাজেক ভ্যালি সম্পর্কে সকল তর্থ্য সুন্দর করে তুলে ধরছি আপনাদের সবিধার জন্য ।
সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত
সাজেক ভ্যালি বর্তমান সময়ে ভ্রমণ পিপাসিদের সবচেয়ে জনপিয় গন্তব্য স্থান হলো সাজেক । সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত এ নিয়ে অনেকের মনে বিভিন্ন ধরেনের প্রশ্ন জাগে । সাজেক ভ্যালি রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত ইউনিয়ন সাজেক । বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন হিসেবে খ্যাত সাজেক । সমুদ্রপৃষ্ট থেকে প্রায় ১৮০০ ফুট উচ্চতায় সাজেকের অবস্থান । সাজেকের অবস্থান রাঙ্গামাটিত জেলায় হলেও এটি ভৌগলিক কারনে এটী খাগড়াছাড়ির দীঘিনালা থেকে সাজেকের যাতায়াতের সুবিধা অনেক সহজ । দীঘিনালা থেকে সাজেক মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান আর খাগড়াছড়ি জেলা থেকে সাজেকের দুরুত্ব ৭০ কিলোমিটার ।
সাজেক ভ্যালির ছবি
চারপাশে মনমাতানো পাহারের সারি , চোখ ধাদানো সাদা মেঘের ভ্যালি দেখেই আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন । যার কিছু একটা দৃশ্য আমাদের এই পোস্টে সাজেক ভ্যালির ছবি এর মধ্যে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম । সাজেক এমনি একটি আশ্চর্য্যজনক স্থান যেখানে আপনি একই দিনে প্রকৃতির তিন তিনটি রুপ দেখতে পারবেন । কখনও বা খুব গরম অনুভব করবেন এর মাঝেই একঝাক বৃষ্টি আপনাকে ভিজেয়ে যাবে , হয় তো বা চোখের পলকেই মেঘের ঘন কুয়াশার চাদরে চারপাশ ঢেকে যাবে । এটাই সাজেকের আশ্চর্য্য সুন্দরর্য্য রুপ ধারণ করে । প্রকৃতির সুন্দরর্য্য আর তুলোর মতো মেঘের পাহাড় থেকে পাহাড়ের উড়াউড়ির দৃশ্য চোখের সামনে দেখতে আদর্শ জায়গা সাজেক ।
পর্যটকদের মনমাতানো প্রধান আকর্ষণ হলো কংলাক পাহাড় । সাজেক ভ্যালির শেষের গ্রাম হলো কংলাক পাহাড় লুসাই জনগোষ্ঠী দ্বারা এই এলাকাটি । কংলাক পাহাড় থেকেই কর্ণফুলী নদীর উতপত্তিস্থল ভারতের লুসাই পাহাড় দেখা যায় । চাইলে আপনি রুইলুই পাহাড় থেকে ২ ঘন্টা ট্রেনিং করে কমলক ঝর্না দেখে আসতে পারেন । অপুর্ব এই ঝর্ণাটিকে কেউ কেউ পিদাম তৈসা ঝর্ণা বা সিকাম তৈসা ঝর্ণা নামেও ডাকে ।
দিন কিংবা রাত সাজেক যেন শিল্পিদের তুলি দিয়ে আঁকা ছবির মত,সময় গড়ায় কিন্তু সাজেক পুরাতন হয় না । সাজেক যদি যান বিশেষ করে সকালের দৃর্শ্য মিস করবেন না । এই সময়ে সুর্যের আলো আর মেঘের মেলায় শুরু হয় । আর এই মেলা দেখতে আপনাকে খুব ভোরে উঠে চলে যেতে হবে হ্যালিপ্যাডে,সেখান থেকেই সবচেয়ে মনমাতানো সুন্দর সুর্যোদয় দেখা যায় । বিকালে কোন একটি উচু স্থান থেকে সুর্যস্তের রঙ্গিন রুপ আপনাকে বিমোহিত করবেই । সন্ধ্যার পরেই আকাশের কোটি কোটি তাঁরা মেলা, আপনার মন মাতিয়ে দিবে নিমিষেই । আকাশ পরিষ্কার থাকলে দেখবেন মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথের ।
ঘুরে দেখতে পারেন আদিবাসিদের বাসস্থান । এই সহজ সরল মানুষদের সান্নিধ্য আপনার ভালো লাগবেই । সাজেক ভ্যালি দেখে চলে আসার পথে যদি হাতের সময় থাকে টূ মেরে আসতে পারেন হাজাছড়া ঝর্ণা ,দীঘিনালার ঝুলান্ত ব্রিজ আর দীঘিনালার বনবিহার থেকে ।
সাজেক ভ্যালি ভ্রমন খরচ
সাজেকের রুপের আসলে তুলনা হয় না । সারা বছরেই সাজেক নানান রুপে সেজে থাকে সাজেক । বছরের যে কোন একসময়ে আপনি যেতে পারেন । তবে জুলাই থেকে নভেম্বর মাসে সাজেকে চারপাশে মেঘে মেলা বেশি থাকে তখন সুন্দর্য্য বেশি ফুটিয়ে তুলে থাকে সাজেক । এই সময়ে ভ্রমন করা উচিত । সাজেক ভ্যালি ভ্রমন খরচ কত জানতে এখানে ক্লিক করুন ।
ডিমলা থেকে সাজেক ভ্রমণে যাবেন
আপনি প্রথমে ডিমলা থেকে হানিফ ,নাবিল,ইত্যাদি বাস নিয়ে সোজা চলে যাবেন ঢাকা । সাজেক ভ্যালি রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও খাগড়াছাড়ি জেলার দীঘিনালা হয়ে সাজেকের যাতায়াত অনেক সহজ । তাই আপনাকে প্রথমেই ঢাকা থেকে খাগড়াছাড়ি আসতে হবে । খাগড়াছাড়ি থেকে সাজেকের দুরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার । খাগড়াছাড়ি শহরের শাপলা চত্বরের কাছ থেকে জীপগাড়ি /চান্দের গাড়ি রিজার্ভ নিয়ে সাজেক ভ্যালি ঘুরে আসতে পারেন । ডিমলা থেকে সাজেকের মোট দুরত্ব ৬৯৭.৭ কিলোমিটার ।
লালমনি থেকে সাজেক ভ্রমণে
আপনি যদি লালমনি জেলা থেকে সাজেক যেতে চান তাহলে আপনাকে লালমনি থেকে আগে ঢাকা যেতে হবে তার পরে আপনাকে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি জেলা আসতে হবে । ঢাকা থেকে কুমিল্লা,ফেনী হয়ে সাজেক আসবেন। লালমনি থেকে ঢাকার দুরত্ব ৩৩৩.৬ কিলোমিটার।ঢাকা থেকে সাজেকের দুরত্ব ৩৩৫.৩ কিলোমিটার ।
পঞ্চগড় থেকে সাজেক ভ্রমণে
আপনি যদি পঞ্চগড় থেকে সাজেক যেতে চান তাহলে আপনাকে পঞ্চগড় থেকে ঢাকা হয়ে সাজেক যেতে হবে । পঞ্চগড় থেকে যেকোন একটি বাস নিয়ে চলে আসবে ঢাকা । আবার ঢাকা থেকে বাস নিয়ে সোজা সাজেক । আপনি চাইলে বাস রিজাভ নিয়েও আসতে পারেন । পঞ্চগড় থেকে সাজেকের মোট দুরত্ব ৭৫০.১ কিলোমিটার ।
রংপুর থেক সাজেক ভ্রমণে
রংপুর থেকে সোজা সাজে যাওয়া যায় না । রংপুর থেকে আপনি আগে ঢাকা যাবেন ,ঢাকার যেকোন বাসে যেতে পারেন । ঢাকা থেকে আপনাকে খাগড়াছাড়ি বাসে উঠবেন কারন ,ঢাকা থেকে সোজা সাজেকের বাস পাওয়া যায় না । খাগড়াছাড়ি থেকে চাঁদের গাড়ি বা সিএনজি নিয়ে সাজেক যেতে হবে ।
গাইবান্ধ থেকে সাজেক ভ্রমণে
গাইবান্ধ থেকে সাজেক যেতে চাইলে আপনাকে প্রথমে গাইবান্ধ থেকে ঢাকা আসতে হবে।ঢাকা থেকে খাগড়াছাড়ি সেখান থেকে চাঁদের গাড়ি নিয়ে সাজেক যেতে হবে।গাইবান্ধ থেকে সাজেকের দুরত্ব ৫৯০.৮ কিলোমিটার ।
সাজেক ভ্রমণ টিপস
- সাজেকের অনেক স্থানে বিদ্যুৎ নেই , তবে রয়েছে সোলার পাওয়ারের ব্যবস্থা।আপনি চাইলে আপনার মোবাইল ফোনের জনে পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে যেতে পারেন ।
- সাজেক ভ্যালি এরিয়াতে শুধু মাত্র রবি,এয়ারটেল ও টেলিটক সিমের নেটওয়ার্ক ভালো পায়।
- সাজেক ভ্যালি যাওয়ার রাস্তা আঁকা-বাঁকা, উঁচু-নিচু তাই এই রাস্তা বিপদজনক। জীপের ছাঁদে ভ্রমণ থেকে সর্তক থাকুন ।
- সাজেক ঘুরতে কোন গাইডের প্রয়োজন হয় না ।
- সাজেক ভ্যালির আদিবাসীদের ছবি তুললে তাদের কাছে আগে অনুমতি নিন । অনুমতি ছাড়া ছবি তুলবেন না ।
- আদিবাসী মানুষরা সহজ সরল তাই তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন ।তাদের কালচার নিয়ে কেউ মজা করবেন না।তাদের কালচারকে সম্নান দেখান ।
- আপনি যদি ছুটির দিনে সাজেক ভ্যালি যেতে চান তাহলে ঝামেলা এড়াতে আগেই রুম বুকিং দেন ।
- সাজেক যাওয়ার পথে কয়েক জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প আছে। সেখানে আপনার ব্যক্তিগত কিছু তথ্য নিবে নিরাপত্তার জন্যে।নিরাপত্তার সার্থে তাদের সহযোগিতা করুন। সাথে করে আপনার নিজের জাতীয় পরিচয় পত্রের কফি নিন।
- ২-৩ দিনের জনে গেলে রিজার্ভ গাড়ি না নিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে যান ,তাহলে কম টাকায় যেতে পারবেন ।কিংবা শুধু যাওয়ার ভাড়া ঠিক করে নিয়ে যান । আসার দিনে অন্য কোন গাড়িতে আসেন কিংবা দিঘীনালা থেকে ফোন করে গাড়ি নিয়ে আসতে পারেন ।
বিশেষ দ্রব্য ঃএকটি বিষয় বলে রাখা ভালো সাজেক শুধু দুই(২) টি সময়ে ডুকতে পারবেন । সকাল ১০টায় আর বিকালে ৪ টায় ডুকতে পারবেন ।মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালি ।
আমাদের banglatipsbd সাইটে আসার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ । আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে । আপনার সুন্দর একটা মতামত দিন আমাদের সাইট সম্পর্কে । আপনাদের মন চাইলে আপনারা আমাদের ফেসবুক পেজ ফলো দিয়ে রাখতে পারেন আর হ্যাঁ পারলে আমাদের ইউটুব চ্যানেল থেকে ঘুরে আসতে পারেন । আবারো ধন্যবাদ জানায় আপনাকে এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ।