পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম , পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ হোমিওপ্যাথি , পাইলস এর ব্যাথা কমানোর ঔষধ , পাইলস এর ট্যাবলেট , পাইলসের রক্ত পড়া বন্ধের ঔষধ , পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয় , পাইলস দেখতে কেমন কিংবা পাইলস এর লক্ষণ গুলো কি কি এই সব সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব ।
পাইলস রোগ অনেকের কাছে অর্শ রোগ নামে বেশ পরিচিত । পাইলস রোগ আমাদের অতি পরিচিত একটি রোগ বলা যায় এটি আমাদের স্বাস্থ্য সমস্যা রোগ । বাংলাদের প্রায় অনেকই লোক আসক্ত । কেউ কেউ দীর্ঘদিন ভুগলে এ ব্যাপারে কোন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নেন না । পাইলস রোগ নিয়ে ডাক্তারের সাথে কথা বলতে অনেকেই সংকোচ বোধ মনে করে থাকে ।
পাইলস রোগী ডাক্তারের কাছে না যেয়ে চলে যায় হোমিওপ্যাথি কিংবা কবিরাজ ঔষধ বা অন্য কোন টোটকা কাছে । এই কাছে গিয়ে পাইলস রোগ আরো ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করে রোগিকে নাজাহাল করে ফেলে । তাই জীবন বাঁচাতে অর্শ রোগ বা পাইলস রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখুন ।
পাইলস রোগের সাথে মোকাবিলা করা খুবই কঠিন । পাইলস এর লক্ষণ গুলো কি কি জানতে অনেকেই আমাদের ফেসবুকে মেসেজ করছেন । পাইলস রোগের যখন চিকিৎসা করান তখন আরোও বেশি কঠিন হয়ে পড়ে । পাইলস রোগ যার হয়েছে সে বুঝে এর জ্বালা কি । যে রোগির পাইলস হয়েছে সে ভয়ে সেখানে হাত দিতে পারে না কিংবা চিকিৎসা করার কোন পরিকল্পনাও থাকে না ।
পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয়
পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয় এগুলো বিষয়ে কম বেশি সবার জানা খুবই দরকার । কারণ পাইলস রোগ কখন কার হয়ে তাই এই বিষয় সম্পর্কে জেনে রাখা অত্যন্ত ধরকার । পাইলস রোগ বা অর্শ রোগ যাই বলুন না কেন এই বিষয় গুলো একই অর্থ নিয়ে আসে তাহলে চলুন পাইলস রোগের অন্যতম চারটি সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা যাক ।
পাইলসের রক্ত পড়া বন্ধের ঔষধ
পাইলস এর লক্ষণ গুলো কি কি সেগুলো আপনি দেখলেই বুঝতে পারবেন যে আপনার পাইলস হইচ্ছে । পাইলস রোগ হলে রোগির পায়খানার সাথে উজ্জ্বল লাল বর্ণের একেবারে তাজা রক্ত আসে । রোগি যখন পায়খানা করে টয়লেট পেপার ব্যবহার করলে দেখবেন সেখানে রক্তের ফোটা লেগে আছে । টয়লেটের কমোড়ে কিংবা প্যানের গায়ে টকটকে লাল রক্তের ছাপ দেখা যাবে ।
আমাদের কাছে অনেকেই জানতে চেয়েছে পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয় আজকে আমরা তাদের জন্য বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবো । পায়খানার রাস্তায় প্রচন্ড আকারের ব্যথা হয় । পাইলস রোগে আক্রান্ত রোগীর তেমন তীব্র ব্যাথা হয় না । পাইলস রোগের কারণে পায়খানার রাস্তায় গোটা গোটা এমন কোন পর্যায়ে চলে যায় । পাইলস দেখতে কেমন এ নিয়ে সবারই একটু জানতে ইচ্ছে করে নিচে তারই একটা পিকচার দিয়ে দিলাম ।
এমন অবস্তায় সেখানে আঙুল দিয়ে ঠেলেও ভিতরে প্রবেশ করানো যাচ্ছে না তাহলে সেখানে প্রচন্ড আকারের ব্যথা করবে । এই ব্যথা স্থায়ী কোন ব্যথা না এটি সাধারণ এক থেকে দুই দিন হয়ে থাকে । এতে আপনি অভিজ্ঞ কোন ডাক্তারের সাথে কথা বলতে পারেন । এটি নিয়ে অনেকে লজ্জা হয়ে ডাক্তারের সাথে পরমর্শ করতে । আপনি যেহেতু এখানে এসেছে তাহলে আপনি আজকে শিখবেন ঘরোয়া উপায়ে ব্যথার চিকিৎসা কিভাবে করবেন ।
পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত আসা কিংবা মলত্যাগের সময় পায়খানার সাথে রক্ত আসা । পায়খানার রাস্তায় কিংবা মলদ্বারে চুলকানি । মলদ্বারে প্রচন্ড আকারে ব্যথা ও ফুলে থাকা । অতিরিক্ত ফুলা বা বের হয়ে আসার জন্য মলদ্বার পরিষ্কার রাখতে সমস্যা হয় । পায়ুস্থান দিয়ে মিউকাস কিংবা শ্লেষ্মা জাতিয় আঠালো পিছলা পিছলা এক প্রকার পদার্থ বের হওয়া ।
পাইলস এর ট্যাবলেট
বিভিন্ন সময় পায়খানার করার পরেও বার বার পেট পরিষ্কার হয় না । পাইলসের রক্ত পড়া বন্ধের ঔষধ নাম কিংবা পাইলস এর ট্যাবলেট এর নাম হলো পাইলো ট্যাব । পাইলো ট্যাবলেট পাইলস বিশেষত্ব এটি ৪টি ভেষধিগুলি , দুগ্ধিকা , দারুহালাদি , নাগকেশর ও লজ্জাবতী সমন্বয়ে পাইলোট্যাব ট্যাবলেটটী তৈরি করা হয়েছে ।
পাইলস এর ব্যাথা কমানোর ঔষধ
পাইলস রোগ হলে অনেক ব্যথা করে মলদ্বারে । পাইলস রোগের কারণে একটি রোগিকে কাহেল করে ফেলে ব্যথার কারণে । মলদ্বারে ব্যাথ্যা করার ফলে মলদ্বারে ফোলা ফোলা হয়ে থাকে । ফোলা হলে সেখানে হাত দেওয়া যায় না । হাত লাগালেই প্রচন্ড ব্যাথ্যা করে । পায়খানার রাস্থায় ব্যাথ্যা করার ফলে সেখান থেকে রক্ত চলে আসে । পাইলস এর ব্যাথা কমানোর ঔষধ জানতে অনেকই চেয়েছে । তাদের জন্যই আজকেই এই আর্টিকেল আমাদের ।
পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম
পাইলস হলে মলদ্বারে তীব্র ব্যাথা জ্বালাপোড়া করে , চুলকানি , রক্তপাত হয় এ নিয়ে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করছি ইতি মধ্যে । পাইলস রোগ হলে এই রোগ সারাতে কিছু এলোপ্যাথিক ঔষধ খাইতে হয় । পাইলস রোগ সারাতে কি কি পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম গুলি জেনে নেই । পাইলস দেখতে কেমন আরো একটি উপরের ছবিতে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম ।
Daflon 1000 mg
পাইলস রোগ হলে এই ঔষধ ব্যবহার করতে হবে এটি অভিজ্ঞ চিকিৎসক বলে । আপনার যদি পাইলস রোগ অনেক পুরুনো হয় তাহলে আপনাকে Daflon 1000 mg খাইতে হবে ।
Daflon 1000 mg খাবারের নিয়মঃ
আপনার যদি একেবারে অতিরিক্ত সময় হয়ে গেছে পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম শুনলেই বা পাইলসের রোগটি তাহলে আপনি মোট ৭ দিন খাবেন । প্রথম চার দিন আপনি একটি সকালে , একটি দুপুর ও রাতে একটি করে খাবেন । চার দিন খাওয়ার পরে আপনি শেষের তিন দিন সকালে ও রাতে একটি করে খাবেন । এভাবে এক মাস খেতে হবে ।
আপনার পাইলস রোগ যদি দীর্ঘ স্থায়ী না হয় তাহলে আপনি Daflon 500mg দুইবেলা খাবেন এক মাস ।
Normanal 500mg
পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের মধ্যে একটি খুব কার্যকারি ঔষধ হলো Normanal 500mg । যে সকল পাইলস রোগীদের মলদ্বারে প্রচন্ড আকারের ব্যথা কিংবা ফোলা , কঠিন জ্বালা পড়া করে তাদের জন্য এই ঔষধটি । এই সেবন করলে পাইলস চিরতরে সেরে যাবে ।
Normanal 500mg খাওয়ার নিয়মঃ
যে সকল পাইলস রোগীদের পায়খার সাথে রক্ত আসে তারা এই ঔষধটি এক মাস সেবন করবেন । এই ওষুধটি দিনে তিন বেলা খেতে হবে । সকালে দুইটা , দুপুরে দুইটা ও রাতে দুইটা করে খেতে হবে ।
আপনি যখন পাইলস রোগ থেকে স্বাভাবিক মনে করবেন তখন আপনি একটি করে আবার টানা এক মাস সেবন করবেন । পাইল যখন একেবারে স্বাভাবিক হয়ে আসবে তখন সকালে আর রাতে একটি করে এক মাস খেতে হবে ।
Lignocaine gel
যে সকল পাইলস রোগীদের মলদ্বারে অনেক জ্বালাপড়া করে তাদের এই জ্বালাপড়া কমতে Lignocaine gel অনেক বেশি কাজ করে থাকে । পায়খানা করার ঠিক ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে এটি ব্যবহার করবেন ।
Erian
পাইলস রোগের কারণে যাদের ব্যথা , জ্বালা কিংবা চুলকানি হয়ে থাকে তাদের জন্য এই Erian ব্যবহার করতে হবে । এটি একটি মলম যা ভিতরের ব্যবহারের নির্দেশনা খাপারের ভিতরে আছে ।
Osmolax
পাইলস রোগের জন্য Osmolax হলো একটি সিরাপ । এটি ব্যবহারের নিয়ম হলো প্রতিদিন রাতে শুয়ার আগে তিন চামচ খেতে হব ।
পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ হোমিওপ্যাথি
পাইলস রোগ যাদের কয়েক দিন আগে থেকে হইছে বা পাইলস রোগে আক্তান্ত হয়েছেন তাদের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় ডিগ্রিতে যদি আপনি হোমিও চিকিৎসা নেন তাহলে খুব তাড়াতাড়ী আপনি ভালো হয়ে যাবেন । পাইলস রোগীদের জন্য তৃতীয় ডিগ্রির হোমিও চিকিৎসা নিলে ভালো হতে পারবেন না । পাইলস দেখতে কেমন আরো একটু গভির করে ছবিতে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম ।
আপনার যদি পাইলস রোগ একেবারে দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায় তাহলে আপনাকে সার্জারি করতে হবে পাইলসের । একটি কথা বলে রাখা ভালো পাইলস রোগের হোমিও চিকিৎসা নিলে আপনি ৯৫ % ভালো হবেন । আসুন আর দেরি না করে এখনি পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ হোমিওপ্যাথি সম্পর্কে জেনে নেই ।
সালফার
Internal and External পাইলসের প্রধান লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণের জন্য এই সালফার একটি কার্যকর প্রতিকার । যাদের বিশেষ করে মলদ্বারে চুলকানি কিংবা জ্বালাপড়া করে ব্যথা করে তাদের জন্য এই সালফার ঔষুধ দিয়ে সারানো যায় ।
নাক্স ভমিকা
পাইলস রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীদের কোষ্ঠকাঠিন্য এই ঔষধ প্রদান করতে হবে । বেদনা কিংবা প্রচন্ড আকারের ব্যথা ও চুলকানি হলে এই নাক্স ভমিকা প্রতিকারের চিকিৎসা প্রদান করতে হবে ।
অ্যালোস
পাইলস রোগিদের মলদ্বারে ব্যথা হলে কিংবা পেল্ভিক অঞ্চলে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হলে অ্যালোস ওষধ ডক্টর দিয়ে থাকেন । পায়খানা করার সময় পায়খানার রাস্তায় প্রচুর জ্বালাপোড়া করে । অ্যালোস এই প্রতিকারের মাধ্যমে কার্যকরভাবে অনেকটাই কমে আসে ।
আর্সেনিক অ্যালবাম
যে সকল পাইলস রোগীদের পায়খানার রাস্তায় দাঁড়াতে গিয়ে কিংবা বসতে গিয়ে জ্বালাপড়া করে তাদের জন্য এই ওষধ ভালো কাজ করে । পাইলস রোগিদের মধ্যে যাদের মলদ্বার ফোলা কিংবা নীলচে পাইলস সাথে প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়ে থাকে তাদের জন্য পাইলস এর ব্যাথা কমানোর উপায় হলো হোমিও চিকিৎসা মাধ্যমে ।
ক্যালকেরিয়া ফ্লুরিকা
যে সকল রোগিদের পাইলসের কারণে মলদ্বারে ব্যথার কারণে হাত দিতে পারেন না কিংবা চুলকানি ও সাথে রক্তপায় হয় তাদের জন্য ক্যালকেরিয়া ফ্লুরিকা অনেক ভালো কাজ করে । এই ওষধ Internal Piles রোগির ক্ষেত্রে চিকিৎসা করা হয় ।
অর্শ বা পাইলস থেকে আপনি কি চিরতরে আপনার জীবন থেকে মুক্তি দিতে চান তাহলে আপনাকে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে । আমরা এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করছি পাইলস সম্পর্কে । পাইলসের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি খুবই গুরুত্ব পূর্ণ ভুমিকা পালন করে । অনেকেই আবার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করে তাদের জীবন থেকে পাইলস চিরতরে বিদায় দিয়ে দিছে । তাদের মতো যদি আপনি পাইলস চিরতরে বিদায় দিতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়তে হবে ।
আসুন জেনে নেই পাইলসের হোমিওপ্যাথির আরোও কিছু ঔষধের নাম যা আপনি ব্যবহার করতে পারেন ।
- নাক্স ভুমিকা
- সালফার
- পালসেটিলা
- পডোফাইলাম
- ইস্কিউলাস
- হিপার সালফ
- এসিড নাইট্রিক
- লাইকোপডিয়াম
- অ্যালো
- ইগনেসিয়া
- হ্যামামেলিস
- কলিনসোনিয়া
আমাদের banglatipsbd সাইটে আসার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ । আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে । আপনার সুন্দর একটা মতামত দিন আমাদের সাইট সম্পর্কে । আপনাদের মন চাইলে আপনারা আমাদের ফেসবুক পেজ ফলো দিয়ে রাখতে পারেন আর হ্যাঁ পারলে আমাদের ইউটুব চ্যানেল থেকে ঘুরে আসতে পারেন । আবারো ধন্যবাদ জানায় আপনাকে এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ।