টনসিল ফোলা কমানোর উপায় ,টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না , টনসিল ইনফেকশনের লক্ষণ এবং টনসিল পেকে গেলে করণীয় কি এই সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে আজকের এই পোস্টে ।
শীত কিংবা গরমে আমাদের কোন ভাবে যদি ঠান্ডা লেগে যায় তাহলে আমরা টনসিলে আক্রান্ত হয়ে পড়ি । মানুষের পিছনের একদম শেষে গলার দুই পাশে যে গোলাকার পিন্ডটি দেখা যায় তাই হলো টনসিল । শীতে ঠান্ডা লাগবে এটাই তো স্বাভাবিক তাই নেয়া ।
একজন মানুষের অনেক দিন ধরে যদি ঠান্ডা লেগে থাকে তাহলে তাদের মধ্যে ৯৯ % লোকের টনসিল হবে । টনসিল হলে বিপাকে পড়েন অনেকেই আজকে মুলত্ব তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট । টনসিল ফোলা কমানোর কিছু দারুন উপায় নিয়ে এই আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে ।
টনসিল যত বারে তত আমাদের ঢোক গিলতে কষ্ট হয় । বিশেষ করে ছোটদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা গুলো খুব বেশি হয়ে থাকে । ছোট বাচ্চাদের কয়েক মাস ধরে গলা ব্যথায় তারা ভীষণ কষ্ট পেয়ে থাকে এই টনসিল এর কারনে । টনসিল ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো তখন প্রকাশ পায় ।
টনসিল হলে শরীর ব্যথা , গলা ব্যথা , টনসিল ফুলে লাল হওয়া শরীরে জ্বর ইত্যাদি আসা । এই সব খুব বেড়ে গেলে তো চিকিৎসকের কাছে যাবেন আগে কিন্তু তার পাশাপাশি আমাদের এই টনসিল ফোলা কমানোর উপায় গুলোর নিঞ্জা টেকনিক প্রয়োগ করবেন ।
সাধারণত যেসব লোকের কোল্ড এলার্জি আছে তাদেরকে কিছু ঠান্ডা খেতে দিলে তারা ঠান্ডা সর্য্য করতে পারে না , খেলে তাদের ঠান্ডা লেগে যায় এই সব মানুষের মধ্যে বেশিরভাগ দেখবেন টনসিলের সমস্যায় ভুগছে ।
টনসিল ইনফেকশনের লক্ষণ
টনসিল ইনফেকশনের লক্ষণগুলি অনেকটা সাধারন জড়ো হতে পারে কিংবা এটি অক্সিজেন , ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ায় উতপন্ন হতে পারে । এটি প্রধান ভাবে মৌখিক এবং গলার অঞ্চলগুলি প্রভাবিত করতে পারে । টনসিল শিশুদের বেশি হয়ে থাকে ।
এই ইনফেকশন সাধারণত দুই ধরনের হয় । একটি হলো তীব্র অপরটি হলো দীর্ঘমেয়াদি । টনসিলের চারদিকে ফোড়া হয়ে পারে । যেটাকে বলা হয় পেরিটোন সেলার এক্ষেত্রে ততক্ষণাত লোকাল এন্সেস এর মাধ্যে পুজ বের হওয়া । এক থেকে দেড় মাস ধরে কাউন্সিল অপারেশন করে ফেলে দিতে হয় ।
টনসিল কেন হয় আসুন এক নজরে দেখে নেই ।
- পুষ্টির অভাব
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
- আইসক্রিম খাওয়া
- ফ্রিজে রাখা শীতল পানি বেশি বেশি পান করা
- মুখ ঠিকমতো ব্রাশ না করা
- টনসিলের ইনফেকশনে কারণ হতে পারে
- ক্ষতিকর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ
- গরমে ঘাম বসে গেলে টনসিলের আসঙ্গা বেড়ে যায়
- সাথে বাসস্থান ঠান্ডা আবহাওয়া শীতের আর্দ্রতা বেশি হলে ।
টনসিল ফোলা কমানোর উপায় জানার আগে আপনাকে জানতে হবে এর প্রধান কারণ কিংবা লক্ষণ কি এই সব বিষয়ে আপনার পরিষ্কার জ্ঞান থাকতে হবে । আসুন আর কথা না বাড়িয়ে দেখে নেই টনসিল ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো কি কি ?
গলা ব্যথা : অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগার কারণে গলা ব্যথা করে আর যদি বেশি দিন ধরে গলা ব্যথা করে তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার টনসিল হয়েছে ।
গরম পানি : গরম পানি খেতে পারেন যেটি আপনার টনসিলের সময়ে কয়েক হাজার গুন সাহায্য করবে ।
মৌখিক বৃদ্ধি ও বৃদ্ধি স্যালাইন ব্যবহার : গুগলের সাথে ব্যবহার করা হতে পারে এমন বৃদ্ধি বা স্যালাইন ব্যবহার করা যেতে পারে আপনার টনসিল সময়ে সাহায্য করতে পারে ।
শরীর অসুস্থ : যদি আপনার জ্বর , কাশি ,ঠান্ডা কিংবা অন্যান্য সময়ে যেগুলি অবস্থা দেখতে পান তাহলে আমাদের নিঞ্জা টেকনিক গুলো ব্যবহার করুন ।
- তীব্র বা মাঝারি ধরনের গলা ব্যথা
- মাথা ব্যথা
- জ্বর
- খাবার খেতে কষ্ট
- মুখ হা করতে অসুবিধা হওয়া
- স্বরভঙ্গ
- গলায় ঘা হওয়া
- মুখ দিয়ে লালা বের হওয়া
- কানে ব্যথা হওয়া
- ঢোক গিলতে কষ্ট হওয়া
- গলা ফুলে যাওয়া
- কন্ঠস্বর ভারি হয়ে যাওয়া
উপরের তথ্য গুলোর উপর ভিত্তি করে টনসিল হয় । টনসিলের চিকিৎসার বিকল্প রাস্তা হলো দুইটি । একটি হলো এন্টিবায়োটিক অপরটি হলো অপারেশন । যদি আপনার টনসিলটা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনের হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে ডাক্তার এন্টিবায়োটিক কোর্স দিয়ে দিবে ।
টনসিলের তীব্রতা যাতে আর বৃদ্ধি না পায় সাথে ব্যথা যাতে আর ছড়িয়ে না পড়ে শরীরে সে জন্য আপনার এই এণ্টিবায়োটিক কোর্স চালিয়ে যেতে হবে । সার্জারি যে সমস্ত পুনরাবৃত্তি মুলক কিংবা ব্যাকটেরিয়া জনিত টনসিলের জন্য এন্টিবায়োটিক কোর্সে যদি কমানো না যায় সেক্ষেত্রে সার্জারি করতে হয় । এখানে সার্জারি বলতে অপরাশেনকে বুঝানো হয়েছে ।
টনসিল পেকে গেলে করণীয়
টনসিল পেকে গেলে করণীয় কি আমরা অনেকেই জানি না তাদের সুবিধার জন্য আজকে আমরা এমন কিছু উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো যা আপনার উপকারে আসবে । টনসিল প্রবল ছাঁটা , গলা ব্যাথা কিংবা বাড়তি জ্বরের কারণে হয়ে থাকে । তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে দেখে নেই টনসিল পেকে গেলে আমাদের করণীয় কি ।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ: টনসিল পেকে গেলে আর কোন কিছু না ভাবে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করব । তাদের কাছে গিয়ে আমাদের অসুস্থতার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচন করব । তাদের পরামর্শের মাধ্যমে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিবে দরকার হলে অপারেশন করবে ।
ঔষধ ও পুস্তিকা : আপনার চিকিৎসক যদি দেখেন যে আপনার ব্যক্তিগত সহায়ক হতে পারতেন তারা আপনাকে প্রয়োজনে কোন ঔষধ দিয়ে আগে দেখবেন যে আপনার সমস্যা সমাধান হবে কি না তার পরে অন্য ব্যবস্তা নিবে ।
এই টনসিল পেকে যায় অনেক দিন ধরে যদি আপনার টনসিল থাকে তাহলে । টনসিল হলে দ্রুত আমাদের নিচে দেওয়া টনসিল দূর করার উপায় গুলো প্রয়োগ করুন । মনে রাখতে হবে টনসিল বেশি ধরে নিজের শরীরে রাখবেন না । বেশি দিন থাকার ফলে এই টনসিল অনেক বড় মারাত্নক সমস্যার রুপ নিতে পারে ।
ভাইরাসজনিত টনসিলাইটিস এর জন্য প্যারাসিটামল ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে থাকে । এ ছাড়াও আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক খেতে পারেন । অনেক কথা বললাম এখন আসুন জেনে নেই টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না ?
টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না
টনসিলের সমস্যায় একবার পরলে আপনাকে অবশ্যই কিছু কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে । যার ফলে আপনার টনসিল সমস্যা ৮০% কমে যাবে । তাহলে চলুন টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না তা দেখে নেওয়া যাকঃ
- চিপস , চানাচুর , ফুচকা , চটপটি , কোমল পানীয় জাতীয় জাস্কফুড খাওয়া যাবে না ।
- অতিরিক্ত তেল মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না ।
- টক জাতীয় খাবার গলা ব্যথা বাড়তে সহায়ক ভুমিকা পালন করে । তাই টনসিলের ব্যথা কমাতে টনসিল এর ঔষধ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার খেতে হবে এবং কোন অবস্থাতেই টক খাওয়া যাবে না ।
- বাঁধাকপি , ফুলকপি ,ব্রকলি এই ধরনের খাবার খাওয়া যাবে না । কারন এই ধরণের খাবারগুলোতে টনসিল সমস্যা বাড়িয়ে তুলে ।
- মুলা , মিষ্টি আলু ,চিনাবাদাম খাওয়া যাবে না ।
- দুধ বা দুগদ্ধজাতীয় খাবার যেমন পনির , চিজ খাওয়া যাবে না ।
- চিনি , রান্না করা গাজর , পাকা কলা, শুকনা ফল , মধু , ময়দার রুটি , আলু , সাদা পাস্ত এবং মিষ্টি একেবারে কম খেতে হবে । এই সব খাবার গুলোতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এর মাত্রা থাকে যা টনসিল বাড়িতে তোলে ।
এমন কি যেসব খাবার শরীরের হজমের সমস্যা করে তোলে সেই সকল খাবার একবারে বাদ দিয়ে দিতে হবে । আপনি যদি পারেন তাহলে উপরের খাবারের তালিকায় যে সকল খাবারের নাম বলা হয়েছে সেই সকল খাবার একেবারে বাদ দিয়ে দিবেন । উপরে খাবার গুলো বাদ দিলে অল্প সময়ের মধ্যে আপনার টনসিল সেরে উঠবে ।
টনসিল ফোলা কমানোর উপায়
অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগলে টনসিল আক্রান্ত হবে এটাই স্বাভাবিক । টনসিলে হলে সব থেকে বড় সমস্যা একটী সেটি হলো আমরা কোন কিছু ঢোক গিলতে গেলে গলায় ব্যথা হয় । তাই এই সমটাতে টনসিল ফোলা কমাতে আমাদের কিছু নিঞ্জা টেকনিক নিয়ে হাজির হয়েছি ।
লেবু ও মধুর ব্যবহার : খুব সহজে আপনি ঘরে বসেই একটি লেব ও একটু মধু দিয়ে আপনার টনসিলের ফোলা কমাতে পারবেন । প্রথমে এক গ্লাস উষ্ণ পানি নিতে হবে । গোটা একটা পাতি লেবুর রস , এক চামচ মধু সাথে একটু নুন নিয়ে ভালো করে মিশাতে হবে । দিনে ৪ থেকে ৫ বার ব্যবহার করুন ।
হলুদ ও দুধের ব্যবহার : এক কাপ গরম দুধের সাথে সামান্য পরিমাণ হলুদ ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে । হলুদে রয়েছে এক প্রকার অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ও এন্টি এক্সিডেন্ট । যা গলা ব্যথা ও টনসিলের ফোলার সমস্যা দূর করতে এটি ভালো কাজ করে । তাই যাদের টনসিল আছে তারা খুব সহজে বাড়িতে বসে এই কাজটি করে ব্যবহার করতে পারেন ।
নুন বা লবণের ব্যবহার : একটি গ্লাসে গরম পানি নিতে হবে এবং তার সাথে হালকা পরিমাণ লবণ দিতে হবে । ধীরে ধীরে গরম পানির ভাপ দিতে হবে টনসিলে । এই ভাবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভাপ দিতে হবে । দেখবে খুব সহজেই আপনার টনসিলের ফোলা কমে গেছে ।
আধার ব্যবহার : আধা দিয়ে সুন্দর করে লাল চা বানিয়ে খেতে হবে । এই আধা টনসিল ফোলা কমাতে দারুন কাজ করে । দেড় কাপ পানিতে এক চামচ আধার কুচি আর আন্দাজ মত চা পাতা দিয়ে ১০ মিনিট ফুটিয়ে বানিয়ে ফেলুন টনসিলের এক মহা ঔষধ । এটি চা দিনে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ বার পান করতে হবে ।
নারকেল তেল : দুই টেবিল চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল গরম করে নিন । এতে কিছু লেবুর রস দিয়ে দিন । তারপরে চার ভাগের এক কাপ কাঁচা মধু ভালো করে মিশিয়ে নিন । এক কাপ গরম পানিতে এই সিরাপ এর এক চামচ মিশিয়ে পান করুন । দিনে দুই থেকে চার বার এই পানি পান করুন আর নিজেই দেখুন এর ফলাফল ।
টনসিল হলো পোস্ট ইওকোনালীর মুখোমুখি অবস্থিত লিম্ফয়েড অঙ্গগুলির একটি সেট যা ওয়াল্ডারের টনসিল রিং নামে বেশি পরিচিত । দেখতে দেখতে আজকের এই আর্টিকেলটি এখানে শেষ করলাম আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে । বর্তমান সময়ে টনসিল একটি বিশাল সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে । এজন্য নিজেদের কে রক্ষা করতে আজকেই এই পোস্টটি লেখা ।
আমাদের banglatipsbd সাইটে আসার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ । আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে । আপনার সুন্দর একটা মতামত দিন আমাদের সাইট সম্পর্কে । আপনাদের মন চাইলে আপনারা আমাদের ফেসবুক পেজ ফলো দিয়ে রাখতে পারেন আর হ্যাঁ পারলে আমাদের ইউটুব চ্যানেল থেকে ঘুরে আসতে পারেন । আবারো ধন্যবাদ জানাই আপনাকে এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ।